হরতালের আগুনে পোড়া মুনিয়ার পাশে ‘গুডহিল’

হরতালের আগুনে পোড়া মুনিয়ার পাশে ‘গুডহিল’

নিজস্ব প্রতিবেদক  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Published: 2014-04-29 19:56:22.0 BdST Updated: 2014-04-29 19:57:02.0 BdST

“মেয়েটা কোলে আসতে চাইত না। আমারে দেখলেই ভয়ে চিৎকার করত। আমার কলিজাটা কষ্টে ছিড়া যাইতো,” গলার ভেতর থেকে ঠেলে আসা কান্না চেপে কথাগুলো বলছিলেন গৃহবধু মুনিয়া বেগম (২০)।

Print Friendly and PDF

0

0

45

গত বছর ১১ নভেম্বর বিরোধী দলের হরতালের মধ্যে মেহেরপুরের গোভীপুর থেকে অটোরিকশায় আমঝুপি যাওয়ার পথে পিকেটারদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় ঝলসে গিয়েছিল মুনিয়ার শরীর।

ওই ঘটনার পর তার দুই বছরের মেয়ে তিশা ঝলসে যাওয়া মাকে দেখে ভয়ে কাছে যেতে চাইত না।

ওই পরিস্থিতি এখন আর নেই। শরীরের ক্ষত শুকিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েও যেন মাকে ফিরে পাচ্ছে।

সরকারি হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সহায়তায় অনেকটাই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছেন।

মঙ্গলবার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘গুডহিল ট্রাস্টের’ পরিচালক যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী রহিজ ভূইয়ার দেয়া ৫০ হাজার টাকা পেলেন মুনিয়া।

গুলশানের নিকেতনে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে সহায়তা নেয়ার সময় জানালেন নিজের কথাগুলো।

বললেন, হাসপাতাল থেকে চিকিৎসার পর এতদিন তেজগাঁওয়ে বোনের বাসাতেই ছিলেন। মঙ্গলবার চলে যাচ্ছেন মেহেরপুরে।

“এখনো চিকিৎসার বাকি আছে। চিকিৎসার জন্য ২ মাস পর পর ঢাকা আসতে হাইবো।”

চিকিৎসকরা হাতে অস্ত্রোপচার করার কথা বলেছেন, বলেন মুনিয়া।

“সরকার তো চিকিৎসা দিবো বলছে, ওষুধ দিবো তাতো বলে নাই। আমি বোমা হামলার শিকার হওয়ার পর অনেকে সাহায্যের হাত বাড়াইছেন।  এখন আর কিছু সাহায্য পাইলে আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারুম।”

মুনিয়ার স্বামী রানা খান মেহেরপুরে বাবুর্চির কাজ করেন। তবে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি করায় ৬ মাস ধরে বেকার।

 

“আমি চাই ওর প্লাস্টিক সার্জারি হোক। কিন্তু ওর চিকিৎসার খরচ বহন করা আমার একার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।” 

পাঁচ বছর আগে নিজেদের পছন্দে তারা বিয়ে করেছিলেন জানিয়ে রানা বলেন, “মানুষ সাহায্য করছে বলেই ওর চিকিৎসা করা গেছে।  আরো কিসু সাহায্য পাইলে ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো।”

গুডহিল ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক তানভীর রাকিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, একটি অনলাইন সংবাদপত্রে মুনিয়ার খবর পড়ে তাকে সাহায্য দিতে এগিয়ে আসেন রহিজ ভূইয়া।

নাইন-ইলেভেনের পর রহিজকে মার্ক এন্থনি স্ট্রোম্যান নামে এক ব্যক্তি গুলি করেছিল। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তবে সেসময়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া স্ট্রোম্যানের মুক্তি চেয়েছিলেন রহিজ, বলেন তানভীর।

সাহায্য নিতে আসা মুনিয়া ও রানাকে ভবিষ্যতে চাকরিসহ  যেকোনো প্রয়োজন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলেন।

http://www.natunbarta.com/outside-dhaka/2014/04/30/79518

Leave a Reply